রাজধানীর মগবাজারের আবাসিক হোটেলে ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর বৃষ্টি হত্যা মামলার একমাত্র আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। চার বছর ধরে শ্যালিকা বৃষ্টির (১৬) সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের পর সুমন তাকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে র্যাব।
গত সোমবার মগবাজারের একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় বৃষ্টির লাশ। ঘটনার ৩২ ঘণ্টা পর অভিযুক্ত সুমনকে মিরপুর পাইকপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আলোচিত ওই খুনের বিষয় গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন র্যাব ৩-এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরানুল হাসান।
ইমরানুল হাসান জানান, ‘আলোচিত এই ঘটনায় একমাত্র আসামি সুমনকে মিরপুরে পাইকপাড়া হতে র্যাব ৩-এর একটি আভিযানিক দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন সুমন।’
ইমরানুল হাসান বলেন, ‘সুমন জানায় চার বছর ধরে শ্যালিকা বৃষ্টির সাথে তাঁর সম্পর্ক। পাবিবারিকভাবে বিষয়টি জানাজানি হলে, বৃষ্টি তার বোনের সংসার বাঁচাতে সম্পর্ক থেকে দূরে সরে যায়। অন্যদিকে পারিবারিক ভাবে বৃষ্টির বিয়েও ঠিক হয়ে যায়। সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে চূড়ান্ত ফয়সালার জন্য বৃষ্টিকে হুমকি দিয়ে ওই আবাসিক হোটেলে ডাকে এবং সেখানে তারা স্বামী স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে থাকে।’
র্যাব কমকর্তা আরো বলেন, ‘সমঝোতা না হওয়ায় একপর্যায়ে সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে খুন করে বৃষ্টিকে। পরে দাঁত দিয়ে ওড়না কেটে ওড়নার একাংশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। হোটেল থেকে বের হয়ে সুমন নিজেই তার বউ বৃষ্টির মেঝো বোন হাসনাকে ফোন করে জানায়, বৃষ্টি মগবাজারে একটি আবাসিক হাসপাতালে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার দিন থেকেই সুমন আত্মগোপনে ছিল।’
ইমরানুল হাসান বলেন, ‘এই ঘটনায় নিহত বৃষ্টির বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।’
র্যাব জানায়, ঘটনার দিন সকালে সুমন ও বৃষ্টি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলের ৪০৭ নম্বর কক্ষে উঠেছিলেন। বিকেলে বৃষ্টিকে কোলে করে নিচে নামানোর চেষ্টা করে সুমন। হোটেল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদে, সুমন বলে তার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়েছে। পরে পুলিশ আসার আগে হোটেল থেকে কেটে পড়ে সুমন।
ইমরানুল হাসান বলেন, ‘ঘটনার পর তৎপর থাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সন্ধান করতে থাকে সুমনের। একপর্যায়ে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’